বিশেষ প্রতিনিধিঃ
পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত ব্যাংক খাতের এক্সপোর্ট ইম্পোর্ট ব্যাংক অব বাংলাদেশ পিএলসি বা এক্সিম ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদ গতকাল ২৯ আগষ্ট ভেঙে দিয়েছে আর্থিক খাতের নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ ব্যাংক। একইসঙ্গে তিনজন শেয়ারহোল্ডারসহ ৫ পরিচালক নিয়োগ দিয়ে নতুন বোর্ড গঠন করে দেওয়া হয়েছে। নিয়োগ পাওয়া পাঁচ পরিচালক হলেন- এক্সিম ব্যাংকের শেয়ারহোল্ডার মো. নজরুল ইসলাম স্বপন, শেয়ারহোল্ডার মো. নুরুল আমিন, শেয়ারহোল্ডার অঞ্জন কুমার সাহা, বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক নির্বাহী পরিচালক এস এম রেজাউল করিম এবং চার্টার্ড অ্যাকাউন্টেন্ট খন্দকার মামুন। সবচেয়ে আশ্চর্যের বিষয় হচ্ছে প্রজ্ঞাপনের আদেশ হাতে পেয়েই আজ শুক্রবার সরকারি বন্ধের দিন খুব গোপনীয় ভাবে পরিচালনা পর্ষদ গঠন করা হয় । নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন জানায় , নজরুল ইসলাম স্বপন আওয়ামীলীগের দালাল মানিলন্ডারিং মামলার আসামি বারভিডার সভাপতি হাবিবুল্লাহ ডনকে পর্ষদে ঢুকানোর জন্য বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নরের কাছে গিয়ে অভিযোগ করেন স্বপন সহ ডনকে অন্যায় ভাবে বের করে দেওয়া হয়েছিল আসলে প্রকৃত ঘটনা হচ্ছে হাবিবুল্লাহ ডনকে মানি লন্ডারিং মামলার জন্য বাদ দেওয়া হয়েছিল আর স্বপন বীরদর্পে বিগত বোর্ড গুলোতে ছিল এবং এখন ক্ষমতাবলে চেয়ারম্যান পদটিও বাগিয়ে নিল ।
সরেজমিন দেখা যায় , এক্সিম ব্যাংকের নতুন চেয়ারম্যান নির্বাচনের লক্ষে বোর্ড মিটিং করা হয় শুক্রবার (৩০ আগস্ট)সরকারি ছুটির দিনে । দুপুরের পর থেকেই এক্সিম ব্যাংকের প্রধান কার্যালয় প্রবেশ করেন দালাল জহির স্বপন এবং তার ভাগিনা সাজ্জাদ কাইয়ুম বহিরাগত কতিপয় কিছু লোক এবং নবনির্বাচিত বোর্ড সদস্যরা । ছিলনা নিয়মের কোন বালাই । এভাবেই গোপনীয় ভাবে ভয়ভীতি প্রদর্শনের মাধ্যমে নজরুল ইসলাম স্বপন চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয় ।
বিষয়টি গণমাধ্যম কর্মীদের কাছে ছড়িয়ে পরলে এক্সিম ব্যাংকের প্রধান কার্যালয়ে যান বিভিন্ন গণমাধ্যমের সাংবাদিকরা । সেখানে সাংবাদিকদের অবস্থানের পর শুরু হয় বিপত্তি,এক্সিম ব্যাংকের নতুন চেয়ারম্যান হওয়া স্বপন আহমেদের পক্ষে অবস্থান নিতে দেখা গেছে কিছু ভারাটে সন্ত্রাসীদের।তারা সাংবাদিকদের বলে যে আজ বন্ধের দিন হওয়ায় এখানে কাউকে প্রবেশ করতে বা দাঁড়াতে দেওয়া হবে না আর আজ কোন বোর্ড মিটিং নেই ।
তখন সাংবাদিকরা তাদের পরিচয় জানতে চাইলে,ভারাটে সন্ত্রাসীরা বিভিন্ন রকমের বক্তব্য দিয়ে সাংবাদিকদের বিভ্রান্ত করার চেষ্টা করে। সন্ধা ৬ টার পরে এক্সিম ব্যাংকের পার্কিং থেকে একে একে কয়েকটি গাড়ি বের হয়। তখন সাংবাদিকরা গাড়ির চালকদের কাছে জানতে চায় যে এখানে তারা কেন এসেছেন এবং কাকে নিয়ে এসেছেন?গাড়ি চালকরা প্রথমে বিষয়টি এড়িয়ে গেলেও পরে ব্যাংকের মিটিং এ আসা তাদের স্যারদের অবস্থানের কথা স্বীকার করে।এর কিছুক্ষণ পরে সাংবাদিকদের সামনে আসে নতুন পরিচালনা পর্ষদের চেয়ারম্যান নজরুল ইসলাম স্বপন সহ অন্যান্য কর্মকর্তারা। এ সময়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে নতুন পরিচালনা পর্ষদে চেয়ারম্যান নির্বাচনের বিষয়টি স্বীকার করে। তবে বন্ধের দিনে কেন বোর্ড মিটিং করা হলো এ প্রশ্নের কোন সদ উত্তর দিতে পারেনি । আর ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদ গঠনের মিটিং এ বহিরাগত সন্ত্রাসীদের কেন আনা হয়েছে,এমন প্রশ্নের জবাবে নতুন চেয়ারম্যান বিষয়টি অস্বীকার করে। যদিও পরে জানা যায় বহিরাগত সন্ত্রাসীদের নেতৃত্বে ছিলেন নতুন চেয়ারম্যানের ভাগিনা ও তার দলবল।